Item
product
BEIGE COTTON SLIP DRESS
Quantity

Total: BDT 1,200

product
BEIGE COTTON SLIP DRESS
Quantity

Total: BDT 1,200

Total:

BDT 3,400

Blog

রুপচর্চায় অনবদ্য মধু

By Anik Rahman
রুপচর্চায় অনবদ্য মধু

শীত আসি আসি করছে। সেই সাথে যেনো বিয়ের ধুম লেগে গিয়েছে। শীতের যত্নেই হোক বা বিয়ের প্রস্তুতিতে, এই সময় ত্বকের প্রতি সকলেই একটু আলাদাভাবে যত্নশীল হয়ে উঠেন। তার জন্য খুঁজে ফিরতে হয় এই সেই নানান ধরনের পণ্য। তবে অনেকেই আছেন যারা বাজারের কেমিক্যাল যুক্ত পণ্যের চাইতে প্রাকৃতিক সামগ্রীর প্রতি বেশি আস্থাশীল। তবে ত্বকের ধরণ অনুযায়ী রূপচর্চায় পরিবর্তন আসায় অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না ঠিক কোন উপাদানগুলোর ব্যবহার তার ত্বকের জন্য সঠিক। আবার উপাদানের কার্যাবলীর রকমফের এবং ত্বকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্যেও তৈরি হয় নানান বিড়ম্বনা। তবে আজ আমরা আলোচনা করব রুপচর্চায় অনবদ্য মধু নিয়ে। আপনাকে শুধু খুঁজে নিতে হবে আপনার ত্বকের ধরনের কেমন আর ঠিক কোন কাজের জন্য আপনি রূপচর্চা করছেন। 

কোন কাজের জন্য রূপচর্চা শুনে একটু অবাক হলেন বুঝি? আদতে ত্বকের একেক ধরনের সমস্যায় একেক ধরনের রূপচর্চার প্রয়োজন। কেউ হয়তো ব্রণ বা পিম্পলের সমস্যা থেকে মুক্তি চান, কেউ বা ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে পারলেই খুশি, আবার কেউ হয়তো অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বক থেকে চান মুক্তি। তাই রুপচর্চায় কেন অনবদ্য মধু তা বুঝতে আপনার চাওয়ার উপর ভিত্তি করেই প্রস্তুত করতে হবে আপনার ফেসপ্যাকটি।  

 

আজকে আমরা কথা বলবো রুপচর্চায় অনবদ্য এক উপাদান মধুর তৈরি নানান ফেসপ্যাক নিয়ে। শীতের যত্নে মধু সেবনের গুরুত্ব নিশ্চয়ই আমরা জানি। তাই সেটা নিয়ে আজ কথা বাড়াচ্ছি না। আজ আসি মধুর বাহ্যিক কিছু ব্যবহার নিয়ে আলোকপাত করতে। 

১। নমনীয় ত্বকের জন্য :

মধু বাতাস থেকে জলীয় কণা ধরে রাখতে বেশ ভালো কাজ করে। তাই একে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজারও বলা হয়ে থাকে। পরিষ্কার ও শুষ্ক ত্বকে নিয়মিত ১ টেবিল চামচ মধু লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট পর কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে ফেললে এটি ত্বককে ভিতর থেকে ময়েশ্চারাইজ করে এবং ত্বক হয়ে উঠে নমনীয়। 

২। লোমকূপে আবদ্ধ ময়লা পরিষ্কারে :

ত্বকের গভীরে গিয়ে পরিষ্কার করতে মধুর জুড়ি নেই। এতে বিদ্যমান এনজাইম ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাবলি ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার করে। ১ টেবিল চামচ মধুর সাথে ২ টেবিল চামচ নারিকেল তেল ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে পরিষ্কার ও শুষ্ক ত্বকে লাগিয়ে হাত দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মালিশ করতে হবে। কিছুক্ষণ থেকে কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের মসৃণতা বৃদ্ধি পাবে, ত্বক হয়ে উঠবে কোমল ও আকর্ষণীয়। 

 

৩। রোদে পোড়াভাব দূর করতে :

মধুর সাথে অ্যালোভেরা মিশিয়ে রোদে পোড়া জায়গায় কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। মধু এবং অ্যালোভেরা, দু’টিতেই আছে অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি গুণাবলি যা ত্বকের রোদে পোড়াভাব দূর করতে চমৎকার কাজ করে৷ একই সাথে মধু ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। ফলে নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠে। তবে অবশ্যই ব্যবহারের পূর্বে কানের নিচে একটুখানি লাগিয়ে দেখে নিবেন। অনেকের অ্যালোভেরাতে অ্যালার্জি থাকায় তা ত্বকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। 

৪। ত্বকের অবাঞ্চিত দাগ দূর করতে :

অনেকেরই ত্বকে ছোপ ছোপ দাগ পরে যা দূর করতে হিমশিম খেতে হয়। তবে এই দাগ দূর করতে মধুর ফেসপ্যাক দারুণ কাজ করে। ১ টেবিল চামচ মধুর সাথে সমপরিমাণ নারিকেল তেল বা জলপাইয়ের তেল মিশিয়ে তা নিয়মিত ভাবে ত্বকে লাগাতে হবে। প্রথমে কিছুক্ষণ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ত্বকে মালিশ করতে হবে। অত:পর কুসুম গরম তোয়ালে মুখে চেপে ধরে ঠান্ডা হওয়া অবধি রাখতে হবে। এরপর ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত ব্যবহারে আস্তে আস্তে এই দাগ দূর হয়ে আসবে। 

 

এছাড়াও মধুর সাথে কাঠবাদামের তেল, গুঁড়া দুধ ও লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে ত্বক লাগালেও দাগ দূর করতে চমৎকার কাজ করে। এক্ষেত্রে ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। ব্রণের দাগ দূর করতেও এই ফেসপ্যাকটি চমৎকার কাজ করে। 

 

৫। ঠোঁট ফাঁটা কমাতে মধুর ব্যবহার :

নানা বর্ণের নানান ফ্লেভারের লিপবামের পরিবর্তে খাঁটি মধুর ব্যবহার আপনাক ঠোঁটকে আরও সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম। ১ চা চামচ আমন্ড তেলের সাথে সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে তা নিয়মিত ভাবে ঠোঁটে লাগালে ঠোঁট ফাঁটা দূর হয়। একই সাথে ঠোঁটের সতেজতা বজায় থাকে।  

 

৬। প্রাকৃতিক স্ক্রাব হিসেবে :

মধু দিয়ে তৈরি স্ক্রাব ত্বকের ক্ষতিসাধন ছাড়াই ত্বকের যত্নে বেশ ভালো কাজ করে। এক্ষেত্রে ২ চা চামচ মধুতে আধা চা চামচ চিনি এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে স্ক্রাব তৈরি করতে হবে। এই স্ক্রাবটি ২-৩ মিনিট হালকাভাবে মুখে ম্যাসেজ করে ধুয়ে ফেলতে হবে। চিনি, লেবু ও মধু একসাথে এক্সফলিয়েটর, দাগ দূর করতে এবং ত্বককে নমনীয় করতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের পরিবর্তন আপনি নিজেই উপলব্ধি করতে পারবেন। তবে স্ক্রাব প্রতিদিন ব্যবহার না করে মাঝে ২/৩ দিন অন্তর অন্তর ব্যবহার করাই উত্তম। 

 

৭। রিঙ্কেলস বা কুঁচকে যাওয়া ত্বকের যত্নে :

২ চা চামচ মধুর সাথে ২ চা চামচ দুধ এবং ৪ চা চামচ আটা ভালোভাবে মিশিতে নিতে হবে। এই পেস্টটি ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট থেকে আধা ঘন্টা রেখে দিতে হবে। এরপর ধুয়ে পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে। নিয়মিত ভাবে ব্যবহার করলে আস্তে আস্তে ত্বকের ভাজ দূর হবে। আর ত্বক হয়ে উঠবে টানটান ও মসৃণ। 

 

৮। ব্রণের সমস্যায় :

ব্রণের সমস্যায় মধু অত্যন্ত চমৎকার কাজ করে। ৩ টেবিল চামচ মধুর সাথে ১ চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। এই পেস্ট রাতে ঘুমানোর আগে ব্রণের উপর লাগিয়ে সকালে কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে ফেলতে হবে। কয়েকদিন নিয়মিত ভাবে এই পেস্ট ব্যবহার করলে ব্রণ দূর হয়ে যায়। আর ব্রণের দাগ দূর করতে চন্দন বাঁটার সাথে মধু মিশিয়ে ব্রণের দাগের উপর লাগাতে হবে। এতে করে আস্তে আস্তে দাগ মিলিয়ে যাবে। 

এতো গেলো ত্বকের যত্নে মধুর নানামুখী ব্যবহার। ঠিক এমনই চুলের জন্যেও কিন্তু মধু বেশ ভালো কাজ করে। চুলের যত্নে মধু ঠিক কীভাবে ব্যবহার করা যায় এবার জানাচ্ছি সেই ব্যাপারেই। 

 

১। চুল পড়া রোধে :

পানি হোক বা ধুলোময়লা, প্রভাবটা যেনো গিয়ে পড়ে আমাদের চুলে। ফলস্বরূপ, গোছায় গোছায় উঠতে থাকে চুল। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে মধুর হেয়ারপ্যাক দারুণ কাজ করে। ১ চা চামচ মধুর সাথে ১ চা চামচ হালকা গরম করে নেওয়া অলিভ অয়েল মিশিয়ে মাথা ধোয়ার আগে স্ক্যাল্পসহ চুলে লাগিয়ে নিতে হবে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে করে চুল পড়া সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে। 

 

২। খুশকি রোধে :

শীতে আরেক সমস্যা হিসেবে মাথাচাড়া দেয় খুশকি। এই বিরক্তিকর খুশকি থেকে স্ক্যাল্পকে সুরক্ষিত রাখতেও ভূমিকা রাখে মধু। মধু ও লেবুর রসের মিশ্রণ চুলের গোড়ায় মালিশ করে তা ২০ মিনিট থেকে আধা ঘন্টা রেখে দিতে হবে। এরপর ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এই হেয়ারপ্যাকটি সপ্তাহ খানেক ব্যবহারে চুলের খুশকি অনেকটাই দূর হয়ে যায়। 

 

৩। চুলের রুক্ষতা দূর করতে : 

উসকোখুসকো চুলকে মসৃণ ও প্রাণবন্ত করতে ১ঃ২ অনুপাতে মধুর সাথে নারিকেল তেল মিশিয়ে সম্পূর্ণ চুলে ভালোমতো মালিশ করে নিতে হবে। বিশ মিনিট এর মতন রেখে ভালোভাবে চুল পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। মধুতে বিদ্যমান এনজাইম এবং নারিকেল তেল চুলে পুষ্টি যোগাতে বেশ ভালো কাজ করে। ফলে চুল হয়ে উঠে ঝলমলে। 

ত্বকের যত্নেই হোক বা চুলের যত্নে, ব্যবহৃত মধু যদি খাঁটি না হয় তবে কোন উপকার তো হবেই না বরং ক্ষেত্রবিশেষে হতে পারে নানান পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। তাই যারা মধুর নানান প্যাক ব্যবহার করেও সমস্যা থেকে মুক্তি পাননি তারা খাঁটি মধুর ব্যবহার করে দেখুন। খাঁটি মধু যেমন আপনাকে দেহের ভিতর থেকে সুরক্ষিত রাখতে ভূমিকা রাখবে ঠিক তেমনি বাইরে থেকেও রাখবে উজ্জীবিত। ব্যবহার করেই বুঝতে পারবেন কেন রুপচর্চায় অনবদ্য মধু। আর হ্যাঁ, যেকোন ফেসপ্যাক ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই একটুখানি কানে পিছে লাগিয়ে দেখবেন। কানের পিছে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখার পর যদি কোনরূপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার দেখা না মিলে তবেই সেই ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করবেন। অন্যথায় হিতে বিপরীত হতে সময় লাগবে না।